part-2)
পরম করুণাময়ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
🌸সূরা বাকারা আয়াত (৬-১৫)
৬.নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কিছুই আসে যায় না তারা ঈমান আনবে না।
৭.আল্লাহ তাদের অন্তকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি।
৮.আর মানুষের মধ্যে কিছু লোক এমন রয়েছে যারা বলে, আমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস এনেছি অথচ আদৌ তারা ঈমানদার নয়।
৯.তারা আল্লাহ এবং ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয় ।অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয় না অথচ তারা তা অনুভব করতে পারে না।
১০.তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন বস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব তাদের মিথ্যাচারের দরুন।
১১.আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করো না ,তখন তারা বলে ,আমরা তো মীমাংসার পথ অবলম্বন করছি।
১২. মনে রেখো, তারাই হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী ,কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না।
১৩.আর যখন তাদেরকে বলা হয় অন্যান্যরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন ,তখন তারা বলেন, আমরা কি ঈমান আনব বোকাদেরই মত! মনে রেখো প্রকৃতপক্ষে তারাই বোকা কিন্তু তারা তা বোঝে না।
১৪.আর তারা যখন ঈমানদারদের সাথে মিশে তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি। আবার যখন তাদের শয়তানদের সাথে একান্তে সাক্ষাৎ করে, তখন বলে আমরা তোমাদের সাথে রয়েছি আমরা তো (মুসলমানদের সাথে)উপহাস করি মাত্র।
১৫.বরং আল্লাহই তাদের সাথে উপহাস করেন ।আর তাদেরকে তিনি ছেড়ে দিয়েছেন যেন তারা নিজেদের অহংকার ও কুমতলবে হয়রান ও পেরেশান থাকে।
🌸আলোচ্য 6 ও 7 আয়াতে আল্লাহ তা'আলা সে সমস্ত কাফের সম্পর্কে আলোচনা করেছেন যারা তাদের কুফরীর দরুন বিরুদ্ধাচারণ ও শত্রুতার পথ বেছে নিয়েছে ।আর যারা এ বিরুদ্ধাচারনের বশীভূত তারা কোন সত্য কথা শুনতে এবং কোন সুস্পষ্ট দলিল প্রমাণের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে প্রস্তুত ছিলনা সে সমস্ত লোকের জন্য আল্লাহর বিধান হচ্ছে যে তাদেরকে দুনিয়াতেই একটি নগদ শাস্তি শুধু তাদের অন্তকরণ রেখে দেওয়া হয়েছে তাদের চোখ কান থেকে অবসর গ্রহণের যোগ্যতা রহিত করে দেওয়া হয়েছে তাদের অবস্থা দাঁড়িয়েছে এই যে সত্যকে উপলব্ধি করার মত বুদ্ধি দেখবার মতো দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি আর তাদের অবশিষ্ট নেই আয়াতে সমস্ত লোকের জন্য কঠোর শাস্তির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
🌸11 ও 12 নং আয়াতে মুনাফিকদের সে ভুলে আলোচনা করা হয়েছে যে, তারা ফেতনা-ফাসাদ কে মীমাংসা এবং নিজেদেরকে মীমাংসাকারী মনে করে।কোরআন পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছে যে,ফাসাদ ও মীমাংসা মৌখিক দাবির ওপর নির্ভরশীল নয়। অন্যথায় কোন চোর বা ডাকাত নিজেদের ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী বলতে রাজি নয়। এ ব্যাপারটি একান্ত ভাবে ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টির আচরণের ওপর নির্ভরশীল ।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আচরণ যদি ফেতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টির কারণ হয় তবে এসব কাজ যারা করে তাদেরকে ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী বলতে হবে ।চাই সে কাজে ফেতনা ফাসাদ সৃষ্টি করা তার উদ্দেশ্য হোক বা না হোক।
🌸 13 নং আয়াতে মুনাফিকদের সামনে ঈমানের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ অন্যান্য লোক যেভাবে ঈমান এনেছে, তোমরাও অনুরূপ ভাবে ঈমান আনো। এখানে নাস শব্দের দ্বারা সাহাবীগণকে বোঝানো হয়েছে। কেননা কোরআন অবতরণের যুগে তারাই ঈমান এনেছিল ।আর আল্লাহতালার দরবারে সাহাবীগণের ঈমানের অনুরূপ ঈমানই গ্রহণযোগ্য।
যে বিষয়ে তারা যেভাবে ঈমান এনেছিল অনুরোধ ঈমান যদি অন্যরা আনে তবে তাকে ঈমান বলা হয় ।অন্যথায় থাকে ঈমান বলা চলে না। এতে বোঝা গেল যে সাহাবীদের ঈমানই ঈমানের কষ্টিপাথর যার নিরিখে অবশিষ্ট সকল উম্মতের ঈমান পরীক্ষা করা হয়।সে যুগের মুনাফিকরা সাহাবীদের কে বোকা বলে আখ্যায়িত করেছে। বস্তুতঃ এ ধরনের সর্বযুগের চলে আসছে।যারা চলার পথ দেখায় তাদের ভাগ্যে সাধারণত বোকা, অশিক্ষিত, মূর্খ প্রভৃতি আখ্যায় জুটে থাকে। কিন্তু কোরআন পরিষ্কার ভাষায় ঘোষণা করেছে যে, এসব লোক নিজেরাই বোকা। কেননা এমন উজ্জল ও প্রকাশ্য নিদর্শনাবলী থাকা সত্ত্বেও তাতে বিশ্বাস স্থাপন করার মত জ্ঞান -বুদ্ধি তাদের হয়নি!
🌸15 নং আয়াতে তাদের এই বোকামির উত্তর দেয়া হয়েছে। তারা মনে করে আমরা মুসলমানদিগকে বোকা বানাচ্ছি, অথচ বাস্তবে তারা নিজেরাই বোকা।
🌎 আল্লাহ তাআলা সত্য বলেছেন।
👉 চলবে...
Subscribe by Email
Follow Updates Articles from This Blog via Email
No Comments