Tafsir-e-Quran সূরা আল বাকারা (আয়াত 31 থেকে 35) অর্থ ও তাফসির - Tafsir e quran-তাফসীরে কোরআন

Tafsir e quran-তাফসীরে কোরআন

আসুন কোরআনের বাংলা অর্থ পড়ি ও জানি
thumbnail

সূরা আল বাকারা (আয়াত 31 থেকে 35) অর্থ ও তাফসির


tafsir e  quran


 👉 পর্ব -৬

✍ পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

🌷 সূরা আল বাকারা (আয়াত 31 থেকে 35) অর্থ ও তাফসির


৩১. আর আল্লাহ তা'আলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু সামগ্রী কে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অতঃপর বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো


৩২. তারা বলল, তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানিনা, তবে তুমি যা আমাদিগকে শিখিয়েছো । নিশ্চয়ই তুমি প্রকৃত জ্ঞান সম্পন্ন, হেকমত ওয়ালা।


৩৩. তিনি বললেন, হে আদম, ফেরেশতাদেরকে বলে দাও এসবের নাম। তারপর যখন তিনি বলে দিলেন সেসব এর নাম, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে,আমি আসমান ও জমিনের যাবতীয় গোপন বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল করেই অবগত রয়েছি? এবং সেসব বিষয়ও জানি যা তোমরা প্রকাশ করো, আর যা তোমরা গোপন করো!


৩৪. এবং যখন আমি আদমকে (আলাইহিস সালাম) সেজদা করার জন্য ফেরেশতাদিগকে নির্দেশ দিলাম, তখন ইবলীস ব্যতীত সবাই সেজদা করল। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।


৩৫. এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাকো, কিন্তু এই গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে। 


🌏 আল্লাহর তায়ালা সত্য বলেছেন।


🌷 এ আয়াতের সারসংক্ষেপ এই-


👉মহান পরওয়ারদিগার আল্লাহ তাআলা যখন আদম আলাই সাল্লাম কে সৃষ্টি করেন এবং বিশ্বের তার খিলাফত প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা করেন, তখন এই সম্পর্কে ফেরেশতাদের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তাঁর এ ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এতে ইঙ্গিত ছিল যে, তারা যেন এ ব্যাপারে নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেন। কাজেই ফেরেশতাগন অভিমত প্রকাশ করলেন যে,মানব জাতির মাঝে এমন অনেক লোক হবে যারা শুধু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে ও রক্তপাত ঘটাবে।সুতরাং এদের উপর খেলাফত ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব অর্পণ এর হেতু তাদের পুরোপুরি বোধগম্য নয়। এ দায়িত্ব পালনের জন্য ফেরেশতাগণই যোগ্যতম বলে মনে হয়। কেননা, পূণ্য ও সততা তাদের প্রকৃতিগত গুন।তাদের দ্বারা পাপ ও অকল্যাণ সাধন আদৌ সম্ভব না। তারা সদা অনুগত।এ জগতে শাসনকার্য পরিচালনা ও শৃঙ্খলা বিধানের কাজ ও হয়তো তারাই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হবেন। 


তাদের এই ধারণা যে ভুল ও অমুলক, তা আল্লাহ পাক শাসকোচিত ভঙ্গিতে বর্ণনা করে বলেন যে,বিশ্ব খেলাফতের প্রকৃত ও মানসিক প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তোমরা মোটেও ওয়াকেফহাল নও। তা কেবল আমিই পূর্ণভাবে পরিজ্ঞাত।


অতঃপর অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে ফেরেশতাদের উপর হযরত আদম আলাই সালাম এর শ্রেষ্ঠত্ব ও জ্ঞানের ক্ষেত্রে তার অনুপম মর্যাদার বর্ননা দিয়ে দ্বিতীয় উত্তর দেওয়া হয়েছে যে, বিশ্ব খেলাফতের জন্য ভূপৃষ্ঠের অন্তর্গত সৃষ্টবস্তু সমূহের নাম, গুনাগুন, বিস্তারিত অবস্থা ও যাবতীয় লক্ষণাদি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা একান্ত আবশ্যক। বস্তুত: ফেরেশতাদের এ‌ যোগ্যতা ও গুণাবলী নেই।।


👉 হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সিজদার নির্দেশ ফেরেশতাএবং জিন জাতিকে করা হয়েছিল। আয়াতে"ইবলীস ব্যতীত"দ্বারা বুঝা যায়। কেননা ইবলিশ জিনদের অন্তর্ভুক্ত।


👉 সম্মানসূচক সেজদা ইসলামে নিষিদ্ধ:

এই আয়াতে হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সেজদা করতে ফেরেশতাদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সূরা ইউসুফে ইউসুফ আলাইহিস সালামের পিতা-মাতা ভাই-বোন মিশর পৌঁছার পর সকলে ইউসুফ আলাইহিস সালামকে সেজদা করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে । এটা সুস্পষ্ট যে, এ সেজদা ইবাদতের উদ্দেশ্যে হতে পারে না। কেননা আল্লাহ্ ব্যতীত অপরের উপাসনা শিরক ও কুফরী। কোন কালে কোন শরীয়তে এরূপ কাজের বৈধতার কোন সম্ভাবনাই থাকতে পারে না।সুতরাং এর অর্থ এ ছাড়া অন্য কোন কিছুই হতে পারে না যে, প্রাচীনকালের সেজদা আমাদের কালে সালাম, মুসাফাহা, মুয়ানাকা, হাতে চুমা খাওয়া, এবং সম্মান প্রদর্শনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার সমতুল্য ছিল।পূর্ববর্তী নবীগণের শরীয়তে বড়দের প্রতি সম্মান সূচক সেজদা করা বৈধ ছিল। শরীয়তে মুহাম্মদী তে তা রহিত হয়ে গেছে।বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পদ্ধতি হিসেবে এখন শুধু সালাম মুসাফাহার অনুমতি রয়েছে। রুকু সিজদা এবং নামাযের মত করে হাত বেধে দাঁড়ানো কে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।।


👉 চলবে...

Subscribe by Email

Follow Updates Articles from This Blog via Email

No Comments

About

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

Copyright . Blogger দ্বারা পরিচালিত.

সূরা বাকারা আয়াত ৯১-৯৫

Tafsir-e-quran সূরা বাকারা আয়াত (৯১-৯৫) পর্ব -১৮ ✍️ পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। 🌷সুরা আল বাকারা(আয়াত ৯১-৯৫) ৯১. আর...