Tafsir-e-Quran সূরা আল বাকারা (আয়াত 36 থেকে 40) অর্থ ও তাফসীর - Tafsir e quran-তাফসীরে কোরআন

Tafsir e quran-তাফসীরে কোরআন

আসুন কোরআনের বাংলা অর্থ পড়ি ও জানি
thumbnail

সূরা আল বাকারা (আয়াত 36 থেকে 40) অর্থ ও তাফসীর


tafsire quran


 👉 পর্ব-৭

✍ পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

🌷 সূরা আল বাকারা (আয়াত 36 থেকে 40) অর্থ ও তাফসীর


৩৬. অনন্তর শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদস্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল এবং আমি বললাম, তোমরা নেমে যাও। তোমরা পরস্পর একে অপরের শত্রু হবে এবং তোমাদেরকে সেখানে কিছুকাল অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে।


৩৭. অতঃপর হযরত আদম (আলাইহি ওয়াসাল্লাম )স্বীয় পালনকর্তা কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, অতঃপর আল্লাহ পাক তার প্রতি লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয়ই তিনি মহা ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু।

৩৮. আমি হুকুম করলাম, তোমরা সবাই নিচে নেমে যাও। অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোনো হেদায়েত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার ওপর না কোন ভয় আসবে, না তারা চিন্তাগ্রস্থ ও সন্তপ্ত হবে।


৩৯. আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার নির্দেশগুলো মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামী, অনন্ত কাল সেখানে থাকবে।


৪০. হে বনী-ইসরাঈলগণ,তোমরা স্মরণ কর আমার সে অনুগ্রহ যা আমি তোমাদের প্রতি করেছি এবং তোমরা পূরণ কর আমার সাথে কৃত প্রতিজ্ঞা, তাহলে আমি তোমাদেরকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করব আর ভয় করো আমাকে। 


🌏 আল্লাহ তায়ালা সত্য বলেছেন।


👉 উপরিউক্ত আয়াতের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা-

⭐৩৬ ,৩৭নং আয়াতের ব্যাখ্যা-


শয়তান আদম ও হাওয়াকে পদস্খলিত করেছিল বা তাদের বিচ্যুতি ঘটিয়েছিল। কোরআনের এসব শব্দের পরিষ্কারে কথা বোঝা যায় যে, আদম ও হাওয়া কর্তৃক আল্লাহ পাকের হুকুম লংঘন সাধারন পাপীদের মত ছিল না, বরং শয়তানের প্রতারণায় প্রতারিত হয়ে তারা এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। পরিণামে যে গাছের ফল নিষিদ্ধ ছিল তা খেয়ে বসলেন।

অতঃপর আল্লাহ তাআলা হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হাওয়া আলাইহিস সালাম কে জান্নাত থেকে দুনিয়ায় পাঠিয়ে দেন শাস্তি হিসেবে । হযরত আদম আলাইহিস সালাম ইতিপূর্বে কখনো এই ধরনের শাসন ও কোপদৃষ্টির সম্মুখীন হননি। তিনি এমন পাষাণ চিত্ত ও ছিলেন না যে, বেমালুম তা সয়ে যেতে পারেন। তাই চরমভাবে বিচলিত হয়ে মনে মনে ক্ষমা প্রার্থনা করতে লাগলেন। মহান আল্লাহ অন্তর যামি এবং অত্যন্ত দয়ালু ও করুণাময়।এ করুণ অবস্থা দেখে আল্লাহপাক নিজে ক্ষমা প্রার্থনা রীতি সম্বলিত কয়েকটি বচন তাদের কে শিখিয়ে দিলেন। তারই বর্ণনায় এ আয়াতসমূহে দেওয়া হয়েছে।


যে সব বাক্য হযরত আদম আলাই সাল্লাম কে তওবার উদ্দেশ্যে বলে দেওয়া হয়েছিল তা কি ছিল ? এ সম্পর্কে মুফাসসির সাহাবাগণের কয়েক ধরনের রেওয়ায়েত রয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস এর অভিমত এ ক্ষেত্রে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ। যা কোরআন মাজিদে অন্যত্র বর্ণনা করা হয়েছে। যার অর্থ-হে আমাদের পরওয়ারদেগার, আমরা আমাদের নিজেদের উপর অত্যাচার করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন, তবে আমরা নিশ্চয়ই ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে পরিগণিত হয়ে যাব।


🌟 তাওবা এর প্রকৃত অর্থ, ফিরে আসা। যখন তাওবার সম্বন্ধে মানুষের সঙ্গে হয়, তখন তার অর্থ হবে তিনটি বস্তুর সমষ্টি:
১-কৃত পাপকে পাপ মনে করে সে জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া।
২-পাপ সম্পূর্ণভাবে পরিহার করা।
৩-ভবিষ্যতে আবার এরূপ না করার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা।
এ তিনটি বিষয়র যে কোন একটির অভাব থাকলে তওবা হবে না।।


⛅ আদম আলাইহিস সালামের পৃথিবীর অবতরণ শাস্তিস্বরূপ নয়।।

👉 প্রথম আয়াতে পৃথিবীর অবতরণের হুকুম ছিল শাস্তিমুলক।সেজন্যই তার সাথে সাথে মানবের পারস্পারিক শত্রুতার ও বিবরণ দেওয়া হয়েছে।এখানে পৃথিবীর অবতরণের নির্দেশে বিশেষ উদ্দেশ্য নিহিত রয়েছে। আর তাহলো বিশ্বে খোদায়ী খেলাফতের পূর্ণতা সাধন। এজন্য এর সাথে হেদায়েত প্রেরণের উল্লেখ রয়েছে,যা খোদায়ী খিলাফতের সম্বন্ধনীয় কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত।এতে বুঝা গেল যে পৃথিবীতে অবতরণের প্রথমে নির্দেশটি যদি ও শাস্তি মূলক ছিল, কিন্তু পরবর্তী সময় যখন অপরাধ ক্ষমা করে দেওয়া ,তখন ও অন্যান্য মঙ্গল হেকমত সমূহের বিবেচনায় পৃথিবীতে প্রেরণের হুকুমের রূপ পরিবর্তন করে মূল হুকুম বহাল রাখা হলো এবং তাদের অবতরণ হল বিশ্বের শাসক খলিফা হিসেবে।


👉চলবে...

Subscribe by Email

Follow Updates Articles from This Blog via Email

No Comments

About

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

Copyright . Blogger দ্বারা পরিচালিত.

সূরা বাকারা আয়াত ৯১-৯৫

Tafsir-e-quran সূরা বাকারা আয়াত (৯১-৯৫) পর্ব -১৮ ✍️ পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি। 🌷সুরা আল বাকারা(আয়াত ৯১-৯৫) ৯১. আর...