পর্ব-৯
✍️ পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি
🌺 সূরা আল বাকারা (আয়াত ৪৬-৫০) অর্থ ও তাফসির
৪৬, যারা একথা খেয়াল করে যে,তাদেরকে সম্মুখীন হতে হবে স্বীয় পরওয়ারদেগারের এবং তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে।
৪৭, হে বনী-ইসরাইল !তোমরা স্মরণ করো আমার অনুগ্রহের কথা, যা আমি তোমাদের উপর করেছি এবং সে বিষয়টি যে,আমি তোমাদেরকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছি সমগ্র বিশ্বের উপর।
৪৮, আর সেদিনের ভয় করো, যখন কেউ কারো সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোনো সুপারিশ ও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ ও নেওয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্য পাবে না।
৪৯, আর স্মরণ করা সে সময়ের কথা,যখন আমি তোমাদেরকে মুক্তি দান করেছি ফেরাউনের লোকদের কবল থেকে যারা তোমাদিগকে কঠিন শাস্তি দান করত এবং তোমাদের পুত্র সন্তানদেরকে জবাই করত এবং তোমাদের স্ত্রীগণকে অব্যাহতি দিত। বস্তুতঃতাতে পরীক্ষা ছিল তোমাদের পালনকর্তা পক্ষ থেকে, মহা পরীক্ষা।
৫০, আর যখন আমি তোমাদের জন্য সাগরকে দ্বিখন্ডিত করেছি, অতঃপর তোমাদেরকে বাঁচিয়ে দিয়েছি এবং ডুবিয়ে দিয়েছি ফেরাউনের লোকদিগকে অথচ তোমরা দেখছিলে।
🌍 আল্লাহ তায়ালা সত্য বলেছেন
.🌺..... আয়াত সমুহের ব্যাখ্যা..…🌺
🌱৪৭ নং আয়াতের ব্যাখ্যা
পৃথিবীতে এমন টা খুব কমই ঘটে যে, দ্বীন ও দুনিয়ার নেতৃত্ব উভয়টি কোন এক স্থানে একত্র হয়ে যায়। এমনটি একেবারেই বিরল যে, উভয় টির মধ্যে এমন ধারাবাহিকতা হবে যে, কয়েক পুরুষ ও বংশ পরস্পরায় চলতেই থাকবে। কিন্তু বনী-ইসরাঈলের শত শত বৎসরের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহতালা এ জাতিকে এত দীর্ঘ কাল পর্যন্ত গর্বিত করে রেখেছেন যে, এত দীর্ঘ কাল পর্যন্ত সম্ভবত ওই গর্ব পৃথিবীর অন্য কোন জাতির ভাগ্যে জোটেনি। আর এটাও সম্ভবত তাদেরই ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য যে, যত বড় অপরাধী ও অবাধ্য এরা হয়েছে, সকল গোত্রের ইতিহাস এর তুলনা বা দৃষ্টান্ত পেশ করতে অক্ষম রয়েছে। সৃষ্টিগতভাবে এত অধিক গর্বের পাত্র হওয়াটাই হয়তো এ জাতির ধ্বংসের কারণ হতে পারে। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই। এ সত্যকে পবিত্র কুরআন অভিযোগের স্বরে ব্যক্ত করেছে যে,
"আমি তোমাদেরকে উচ্চ মর্যাদা দান করেছি সমগ্র বিশ্বের উপর;
🌱৪৮ নং আয়াতের ব্যাখ্যা
আলোচ্য আয়াতে যে দিনের কথা বলা হয়েছে, সেটি হল কিয়ামতের দিন। দাবি আদায় করে দেওয়ার অর্থ-যেমন কেউ যদি বলে যে, আমার নামাজ রোজার বিনিময়ে তাকে হিসাব মুক্ত করে দেওয়া হোক, তবে তা গৃহীত হবে না। বিনিময় অর্থ, টাকা পয়সা ধন সম্পদ এর বিনিময়ে দায়মুক্ত করে দেওয়া। এ দুটির কোনোটিই গ্রহণ করা হবে না। ঈমান ব্যতীত সুপারিশ গৃহীত না হওয়ার কথা কোরআনের অন্যান্য আয়াত দ্বারাও বোঝা যায়। প্রকৃত প্রস্তাবে এদের পক্ষে কোন সুপারিশই হবে না ,ফলে তা গ্রহণ করার কোন প্রশ্নই উঠে না।
মোট কথা, দুনিয়াতে সাহায্য করার যত পদ্ধতি আছে ইমান ব্যতীত সেগুলোর কোনটাই আখেরাতে কার্যকর হবে না (আল্লাহ আমরা যেন সকলে ঈমান নিয়ে কবরে যেতে পারি আমিন)
🌱৪৯নং আয়াতের ব্যাখ্যা
কোন ব্যক্তি ফেরাউনের নিকট ভবিষ্যৎবাণী করেছিল যে, ইসরাইল বংশে এমন এক ছেলের জন্ম হবে , যার হাতে তোমার রাজ্যের পতন ঘটবে। এজন্য ফেরাউন নবজাত পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা করতে আরম্ভ করলো। আর যেহেতু মেয়েদের দিক থেকে কোনরকম আশঙ্কা ছিল না, সুতরাং তাদের সম্পর্কে নিশ্চুপ রইল। দ্বিতীয়তঃ এতে তার নিজস্ব একটি মতলব ছিল যে, সেই স্ত্রীলোকদের কে দিয়ে ধাত্রী- পরিচারিকার কাজ করানো যাবে।
এ ঘটনার দ্বারা হয় উল্লেখিত হত্যাকান্ড কে বুঝানো হয়েছে, কিংবা বিপদে ধৈর্যের পরীক্ষা অথবা অব্যাহতি দানের কথা বুঝানো হয়েছে। মা এক অনুগ্রহ ও নেয়ামত। আর নেয়ামতের ক্ষেত্রে শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতার পরীক্ষা হয়। এর পরবর্তী আয়াতে অব্যাহতি দানের বিবরণ রয়েছে।
👉চলবে,,,
Subscribe by Email
Follow Updates Articles from This Blog via Email
No Comments